বাংলার ইতিহাসঃ কলকাতার রেলপথের ইতিহাস- শিয়ালদহ - Human Timelines Myth & History

Hot

Post Top Ad

Saturday, February 17, 2018

বাংলার ইতিহাসঃ কলকাতার রেলপথের ইতিহাস- শিয়ালদহ

শেয়ালদহের কথা একটু আলাদা রকমের। ইষ্টার্ণ বেঙ্গল গ্যারান্টীড রেলয়ের পত্তন করা হয় ১৮৬২ সালে। ১৮৮৪ সালে সরকার একে নিয়ে নেবার পরে নাম বদল করে ইষ্টার্ণ বেঙ্গল রেলয়ে রাখা হল আর নর্থ বেঙ্গল স্টেট রেলয়ে আর সাউথ ইস্টার্ণ রেলয়ের সাথে মিলিয়ে দেওয়া হল। তার পরে একে আসাম বেঙ্গল রেলয়ের সাথে মিলিয়ে নাম রাখা হল বেঙ্গল অ্যান্ড আসাম রেলয়ে।





বর্তমান শেয়ালদহ দক্ষিন ষ্টেশনের নাম আগে ছিল বেলেঘাটা। যেখান থেকে প্রথম গঙ্গার পুর্ব পাড়ের ট্রেন চলে। ট্রেন চলে পোর্ট ক্যানিং। পোর্ট ক্যানিং হচ্ছে বর্তমান ক্যানিং ষ্টেশন , মাতলা নদীর পাড়ে অবস্থিত। এটা হল ১৮৬২ সালের কথা। লাইন তৈরি করলেন ক্যালকাটা অ্যান্ড সাউথ ইষ্টার্ণ রেলয়ে কোম্পানি। এই কোম্পানি তৈরী হয় ১৮৫৯ সালে। কিন্তু পরে গভর্ণমেন্ট এই কোম্পানীকে অধিগ্রহণ করেন। ভারতবর্ষে এই প্রথম কোন কোম্পানীকে সরকার অধিগ্রহন করেছিল।


সরকারী কোম্পানি হিসাবে কলকাতা অর্থাৎ বেলেঘাটা থেকে ডায়মন্ড হারবার লাইনের সংযোগ হয় ১৮৮৩ সালেও আর বেলেঘাটা বজবজ ১৮৯০ সালে। লক্ষীকান্তপুরের লাইন অনেক পরে ১৯২৮ সালের কথা।


এখনও কিন্তু আমি শেয়ালদহ থেকে বাংলার উত্তরে এবং বর্তমান বাংলা দেশ আর আসামে লাইন নিয়ে যাবার কথাতে আসিনি। ১৮৫৭ সালে কলকাতার সাথে এই সমস্ত জায়গার যোগাযোগ বানানোর জন্য ইষ্টার্ণ বেঙ্গল রেলয়ে কোম্পানি তৈরী করা হয়েছিল। ১৮৮৪ সাল নাগাদ রানাঘাট এবং বনগার সাথে রেল যোগাযোগ চালু হয়ে গেল।


যেহেতু শেয়ালদহ ষ্টেশনের এলাকা, একটু নীচু কাদায় ভরা জলা জমি থেকে উদ্ধার করা তাই ষ্টেশন তৈরি করতে গিয়ে প্রায় ৫০ ফুট (প্রায় দশ মানুষের মত) গভীর গর্ত করে ভিত তৈরী করতে হয়েছিল। তা ছাড়া শেয়ালদহ থেকে প্রায় দমদম পর্যন্ত লাইনের জমি চারদিকের জমির থেকে মাটী ফেলে অনেক উচু করে তৈরী করতে হয়েছিল। কারন হচ্ছে পুব-পশ্চিমের রাস্তা এবং জলপথ গুলি।


এখন কিন্তু কলকাতার কাছকাছি গঙ্গার দুই পাড়ের মধ্যে রেলপথের যোগাযোগ করা যায় নি। এই যোগ সম্ভব হল গঙ্গার উপর হুগলীতে জুবিলী ব্রিজ তৈরি করার পরে। নৈহাটি আর ব্যান্ডেলের মধ্যে এই ব্রিজ তৈরি ১৮৮৭ সালে। পরে দক্ষিণেশ্বরের কাছে বিবেকানন্দ সেতু বা উইলিন্ডন ব্রিজ তৈরী করে গঙ্গের উপরে দুই পাড়ের আর একটি যোগসূত্র স্থাপন করা হয় ১৯৩২ সালে।


এদিকে বর্তমান বাংলাদেশের সীমান্ত গেদে-দর্শনা পেড়িয়ে আগে লাইন ছিল উত্তরে শিলিগুড়ি পর্যন্ত যেখান থেকে টয় ট্রেন যেত দার্জিলিং। পদ্মার উপরে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ তৈরি হবার আগে পদ্মার উপরে ফেরীর বন্দোবস্ত ছিল। ব্রিজ হয়ে যাবার পরে ট্রেন থেকে আর নেমে ফেরীতে চড়তে হত না। সান্তাহারএর পরে স্টেশন পার্বতীপুর। এই পার্বতীপুর থেকে মিটার গেজের ট্রেন ছিল আসাম পর্যন্ত। কুচবিহার স্টেট রেলয়ে লাইনটা বাড়ীয়ে বক্সা জয়ন্তী হয়ে মালবাজার পর্যন্ত নিয়ে যান।
আমার রেলপথের বিবরন এখানেই শেষ করলাম। কলকাতা ষ্টেশনের বিবরণ আর দিলাম না কেননা এটা হাওড়া আর শেয়ালদহের তুলনায় অনেক নবীন, এর ইতিহাস তৈরি এখনও শুরু হয়নি।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad